ডাইনোসরদের যুগের শুধু অতিকায় আর শক্তিশালী ডাইনোসরেরা ছিল তা নয়, কম্পসোন্যাথাস তার জ্বলন্ত প্রমাণ । আপনার যদি আকার সম্পর্কে কোন ধারণা না থাকে বা যাদি একে জুম করে আপনার সামনে ধরা হয়, নিশ্চিতভাবে আপনি একে টি-রেক্স বলে ভুল করতে পারেন, কারন এদের টি-রেক্সের মতই ধারালো দাঁত, নখ ,বড় বড় চোখ আর খাবার ছিনিয়ে নেবার প্রবণতা ছিল । কিন্তু স্বস্তির কথা হল যে, এরা আকারে স্বাভাবিক

Compsognathus ও আরো কিছু ডাইনোসরের তুলনামূলক আকার। তবে Compsognathus ই সবচে’ ছোট ডাইনোসর নয়! (ছবিস্বত্বঃ দ্য লার্নিং পেজ)
মুরগির চেয়েও ছোট ছিল। ওজন ৫ পাউন্ডের মত আর উচ্চতা ২ ফুটের কাছাকাছি । ছোট ছোট হাতে ছিল ৩ টা করে আঙ্গুল । কিন্তু আকারে ছোট বলে তাচ্ছিল্য করবেন না, এদের শক্ত চোয়াল কিন্তু আপনার পায়ের এক খাবলা মাংস সহজে তুলে নিতে পারে।
কম্পসোন্যাথাস দের এই পৃথিবীতে আগমন ঘটেছিল জুরাসিক যুগের শেষ দিকে, মানে প্রায় ১৫ কোটি বছর আগে!!! এদের খাবার ছিল ছোট ছোট সরীসৃপ আর স্তন্যপায়ীরা । তাই এরা সরোপড বা মাংসাশী শ্রেনির অন্তর্ভূক্ত। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, এরা অত্যন্ত দ্রুত গতিসম্পন্ন ছিল, চোখের দৃষ্টি ছিল প্রখর । তাই রাতের বেলায় এরা ভাল ভাবেই দেখতে পেত। তাই এরা রাতের বেলায় দলবেঁধে শিকারে বের হত। এরা নিজেদের চেয়েও বড় শিকার ধরতে সক্ষম ছিল।
একসময় কম্পসোন্যাথাস দের সবচেয়ে ছোট ডাইনোসর বলে মনে করা হত। যদিও এরপর এদের চেয়ে ছোট ডাইনোসরের কঙ্কাল আবিস্কৃত হয়েছে। এই মুকুট এখন “মাইক্রো রেপটর” এর কাছে গচ্ছিত আছে। এদের ফসিল প্রথম আবিস্কৃত হয় ১৮ শতকের মাঝামাঝি সময়ে ,জার্মানি তে। এদের আকার ছোট বলে ই হয়ত এদের ফসিল খুজে পেতে এত সময় লেগেছে , কারন ছোট প্রানিদের কঙ্কাল মাটিতে সহজেই মিলিয়ে যায় ।

জার্মানির বাভারিয়ায় ১৮৫৯ সালে আবিষ্কৃত Compsognathus এর ফসিল। ছবিস্বত্বঃ ক্রিয়েটিভ কমন্স
একটা চমকে দেওয়া তথ্য দেই। কম্পসোন্যাথাস রা সম্ভবত তাদের সময়ের একমাত্র পুর্ণাঙ্গ ডাইনোসর ছিল । তাদের সময়ে বাস করত আর্কিওপ্টেরিক্স নামে আধা পাখি আর আধা সরিসৃপ প্রানী। আরও ছিল প্রাগৈতিহাসিক প্রাণী আর প্রাগৈতিহাসিক মাছেরা। প্রাগৈতিহাসিকরা মনে করেন প্রাথমিক যুগের ডাইনোসরদের ও ৮ কোটি বছর আগে এরা পৃথিবী তে ছিল। কেউ কেউ মনে করে থাকেন এদের দেহে পালকের অস্তিত্ব ছিল। কিন্তু ফসিলে পালকের কোন চিহ্ন পাওয়া যায় নি।